Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ছবি
শিরোনাম
সয়াবিন উৎপাদন, রামগতি, লক্ষীপুর
বিস্তারিত

সয়াবিন উৎপাদন, রামগতি, লক্ষীপুর

 

লক্ষ্মীপুর জেলা দেশের সয়াবিন ভান্ডার বলে খ্যাত। দেশে উৎপাদিত সয়াবিনের ৮০ ভাগ চাষ হয় এ জেলায়। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সয়াবিন চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। রায়পুর উপজেলার চরাঞ্চলে যতদূর চোখ যায়- মাঠের পর মাঠ এখন সয়াবিনের চারার সবুজ হাতছানি। এ ফসল নিয়ে কৃষকদের চোখে-মুখে এখন রঙিন স্বপ্ন। তাই এখানে নারিকেল, সুপারী আর ধানের সাথে এখন যোগ হয়েছে সয়াবিন। সংশিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রতিবছর শুধু রায়পুর উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের ৪টি ইউনিয়নে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা সয়াবিনের ওপর লেনদেন হয়। এ জন্য এটিকে কৃষকরা সোনার ফসল বলে থাকেন। সয়াবিন বদলে দিয়েছে উপকূলীয় হায়দরগঞ্জ বাজার ও আশপাশ এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার মান। এ ফসল বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন হাজার হাজার কৃষক। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত সয়াবিন তেল ও পোল্ট্রি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে সয়াবিন কেনার জন্য ছুটে আসেন এখানে। উপজেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত সয়াবিনের ৮০ ভাগ উৎপাদন হয় লক্ষ্মীপুরে জেলার রায়পুর, কমলনগর ও রামগতিতে। গত বছর রায়পুর উপজেলায় ৬ হাজার ১৫৫ হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদ করা হলেও এবছর বীজের সংকট না থাকায় আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৮’শ ২০ হেক্টর। যা গত বছরের তুলনায় ৬’শ ৬৫ হেক্টর বেশি। গত বছর এই উপজেলায় ৯ হাজার ২৩৩ মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদন হয়েছে। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন হবে ১১ হাজার ২৫৩ হবে। কৃষকদের দাবি- এ জেলায় সয়াবিনভিত্তিক কারখানা স্থাপন ও দাদন ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ করা হলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পেয়ে সয়াবিন চাষে ব্যাপকভাবে আরও আগ্রহী হয়ে উঠবেন। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে হাজার-হাজার বেকার যুবকদের। রায়পুর শহর থেকে পশ্চিমে ২০-২৫ কিলোমিটার দূরে চরজালিয়া গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ সয়াবিনের চারা। এছাড়া চরঘাসিয়া, চর জালিয়া, চরইন্দুরিয়া ও কানিবগার চরে একই চিত্র। কৃষকরা ক্ষেতে রোদে পুড়ে ফসলের পরিচর্যা করছেন। অপেক্ষার প্রহর গুণছেন- সোনার ফসল ঘরে তোলার। উপজেলার উত্তর চর আবাবিল গ্রামর কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, এবারের মত আর জীবনেও সয়াবিনের এরম ফসল চাষ করতে দেহি নাই। এখন খেতে কোন রোগ বালাই না হড়লে অনেক সয়াবিন ঘরে উডাইতাম হারিয়াম। এ ব্যাপারে হায়দরগঞ্জ বাজারের সয়াবিন ব্যবসায়ী ও মেসার্স মোল্লা ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সাইজুদ্দিন মোল্লা জানান, চলতি বছর সয়াবিন আবাদ বেশি হয়েছে। আগামী ২-৩ মাস আবহাওয়া সম্পূর্ন অনুকূলে থাকলে কৃষকরা বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে পারবে। লক্ষ্মীপুর জেলায় রেকর্ড পরিমাণ সয়াবিন উৎপাদন হলেও গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে সয়াবিনভিত্তিক কোনো শিল্প গড়ে ওঠছেনা। যোগাযোগ করা হলে রায়পুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জহির আহম্মেদ বলেন, চলতি বছর কৃষকের কাছে পর্যাপ্ত পরিমান বীজের থাকায় সয়োবিন আবাদ লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ পারিয়ে অতিরিক্তি অর্জিত হয়েছে। কৃষকরা যেন সঠিক সময়ে সয়াবিন ক্ষেতে সার কীটনাশক ব্যবহার, পোকা দমনে জৈবিকপ্রক্রিয়া প্রয়োগ করতে পারে সেজন্য মাঠ কর্মীরা তদারকিতে রয়েছেন। পোকামাকড় থেকে রক্ষা ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার সয়াবিন উৎপাদন অতিতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।